টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড কি?

সরকারি চাকরিতে পদোন্নতি না হলেও দীর্ঘদিন একই পদে থেকে কাজ করার জন্য বেতন কাঠামোয় অগ্রগতি বা “টাইম স্কেল” প্রদান করা হয়। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ এটি মূলত কর্মীর বেতনক্রমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি ধাপ বা স্কেল উন্নীত করে, যাতে তার কর্মস্পৃহা বজায় থাকে। সাধারণত, ৮, ১২ বা ১৫ বছর পূর্ণ হলে এই টাইম স্কেল প্রযোজ্য হয়। bd job circular

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ

Table of Contents

সিলেকশন গ্রেডের সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা

সিলেকশন গ্রেড হলো নির্দিষ্ট সময় ধরে সন্তোষজনকভাবে দায়িত্ব পালনকারী একজন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে বিশেষ মূল্যায়নের ভিত্তিতে উচ্চতর গ্রেড বা স্কেলে উন্নীত করার একটি পদ্ধতি। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ টাইম স্কেলের তুলনায় আরও সম্মানজনক এবং দক্ষতার মূল্যায়নের উপর নির্ভর করে। bd jobs circular

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের আইনি ভিত্তি

সরকারি নীতিমালা ও জিও (GO) সমূহ

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিধান মূলত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন ও সার্কুলারে বর্ণিত। বিশেষ করে ২০১৫ সালের সরকারি কর্মচারী বেতন কাঠামো ও ২০২১ সালের সংশোধনীতে এগুলোর স্পষ্ট উল্লেখ আছে। job circular bd

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গাইডলাইন

এ সংক্রান্ত সকল নির্দেশিকা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ সংশ্লিষ্ট অফিসের মাধ্যমে এগুলো বাস্তবায়ন হয়, এবং স্থানীয় প্রশাসন এর সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করে।

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ

কারা এই সুবিধা পান?

  • যোগ্যতা নির্ধারণের নিয়মাবলী
  • চাকরির নির্দিষ্ট বছর পূর্ণ করতে হবে (৮, ১২ বা ১৫ বছর)
  • কর্মফল সন্তোষজনক হতে হবে
  • কোনও বড় ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ না হওয়া
  • বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (ACR) ভালো হতে হবে
  • বিভিন্ন ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদের জন্য শর্তাবলি

সব ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তা ও নন-ক্যাডার কর্মচারীদের জন্য টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ প্রযোজ্য। তবে কিছু বিশেষ পদ বা সংস্থার জন্য পৃথক নীতিমালা থাকতে পারে। teletalk job application

টাইম স্কেল কিভাবে কাজ করে?

নির্ধারিত সময়সীমা অনুযায়ী গ্রেড বৃদ্ধি

যেমন, একজন অফিস সহকারী যদি ৮ বছর ধরে একই পদে থাকেন, তাহলে তিনি টাইম স্কেল প্রাপ্ত হবেন এবং তার বেতন কাঠামো পরিবর্তিত হবে। এই নিয়মটি মূলত কর্মচারীদের স্থিতিশীলতা ও কর্মনিষ্ঠতা পুরস্কৃত করার জন্য। govment job circular bd

মূল বেতনের কাঠামোতে পরিবর্তন

টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেলে মূল বেতন বাড়ে, ইনক্রিমেন্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়।

সিলেকশন গ্রেডের প্রক্রিয়া

মূল্যায়নের পদ্ধতি

সিলেকশন গ্রেডের জন্য একজন কর্মচারীর ACR, উপস্থিতি, শৃঙ্খলা, পেশাগত দক্ষতা এবং সিনিয়র অফিসারদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এটি মূলত মেধাভিত্তিক মূল্যায়ন।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব

  • বিভাগীয় প্রধান প্রাথমিকভাবে পর্যালোচনা করেন
  • মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়
  • অর্থ বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন হতে পারে

টাইম স্কেল বনাম সিলেকশন গ্রেড

বিষয়টাইম স্কেলসিলেকশন গ্রেড
ভিত্তিচাকরির সময়কালপারফরম্যান্স মূল্যায়ন
প্রাপ্তির নিয়মনির্ধারিত বছর পরসুপারিশ ও মূল্যায়ন সাপেক্ষে
সম্মানতুলনামূলক কমবেশি
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ

কোনটি বেশি উপকারি?

সিলেকশন গ্রেড অনেক সময় পদোন্নতির মতো মর্যাদা বহন করে। তবে টাইম স্কেলও আর্থিক উন্নতির গুরুত্বপূর্ণ উপায়। বাস্তবতা হলো—উভয় সুবিধাই গুরুত্বপূর্ণ এবং পরস্পর পরিপূরক। govment job circular bd

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডে প্রভাবিত হয় যেসব বিষয়

পদোন্নতি ও ইনক্রিমেন্ট

এগুলোর মাধ্যমে কর্মচারী পদোন্নতিতে অগ্রাধিকার পায় এবং ইনক্রিমেন্ট দ্রুত হয়।

পেনশন ও অবসর সুবিধা

বেতনের ভিত্তিতে পেনশন নির্ধারিত হওয়ায় টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেডে বেতন বাড়লে পেনশন সুবিধাও বাড়ে।

বাস্তব অভিজ্ঞতা ও উদাহরণ

একজন সরকারি কর্মকর্তার বাস্তব কাহিনী

  • মোঃ সাইফুল ইসলাম, একজন সাঁটলিপিকার। ১২ বছর ধরে একই পদে ছিলেন। টাইম স্কেল ও পরে সিলেকশন গ্রেড পাওয়ার ফলে তার বেতন প্রায় দ্বিগুণ হয় এবং তিনি এখন আরও অনুপ্রাণিত হয়ে কাজ করছেন। bangladesh government job circular
  • অফিসিয়াল ডেটা ও পরিসংখ্যান
  • জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতে, ২০২২ সালে প্রায় ৩৫,০০০ কর্মচারী টাইম স্কেল ও ১২,০০০ জন সিলেকশন গ্রেড সুবিধা পান।

👉 পরবর্তী অংশে আসছে আবেদন প্রক্রিয়া, অভিযোগ ও FAQs সহ আরও বিস্তারিত।
চালিয়ে যেতে বলুনঃ “Continue writing next part.”

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ

সরকারি কর্মচারীদের সাধারণ জিজ্ঞাসা

আবেদন প্রক্রিয়া সংক্ষেপে

টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেডের জন্য নির্ধারিত কোনো আলাদা আবেদন করতে হয় না। তবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নথিপত্র হালনাগাদ রাখতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে কর্মচারী নিজেই অফিসিয়ালি অনুরোধপত্র দিতে পারেন, যদি নিয়মিত সময়ে সুবিধা না পান।

যা যা লাগে:

  • চাকরির সময়কাল সম্পর্কিত সার্টিফিকেট
  • সর্বশেষ ACR
  • নিয়োগপত্র ও পদবি সম্পর্কিত তথ্য
  • কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না থাকা বিষয়ক সার্টিফিকেট
  • প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
  • ACR রিপোর্ট (সর্বশেষ ৫ বছরের)
  • অফিসার ইনচার্জের সুপারিশ
  • সময় পূর্ণ হওয়ার সার্টিফিকেট
  • বেতন স্লিপ বা হিসাব সংক্রান্ত তথ্য

টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড না পেলে করণীয়

  • অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া
  • আপনি যদি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড না পান, তবে প্রথমেই আপনার নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করতে হবে। প্রয়োজন হলে পরবর্তী পর্যায়ে বিভাগীয় অফিস ও মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করতে পারেন।
  • উচ্চ আদালতে রিট করার নিয়ম
  • যদি বারবার আবেদন করেও ন্যায্য সুবিধা না পান, তাহলে হাইকোর্টে রিট করার সুযোগ আছে। এর জন্য অভিজ্ঞ আইনজীবীর সহায়তা গ্রহণ করা উত্তম।

সময়মতো সুবিধা না পাওয়া গেলে সমস্যাগুলো

  • আর্থিক ক্ষতি
  • টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড বিলম্বিত হলে মূল বেতন কম থাকে, ফলে ইনক্রিমেন্ট কমে যায় এবং ভবিষ্যৎ পেনশনেও ক্ষতি হয়।
  • মনোবল ও কর্মস্পৃহা হ্রাস
  • একজন যোগ্য কর্মচারী যখন দেখেন যে তার সহকর্মীরা সুবিধা পাচ্ছেন অথচ তিনি পাচ্ছেন না, তখন তার মনোবল নষ্ট হয় এবং কর্মস্পৃহা কমে যায়। টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ

ভুয়া তথ্য ও ভুল ধারণা

  • প্রচলিত ভুল ব্যাখ্যা
  • টাইম স্কেল মানেই পদোন্নতি—এটি ভুল।
  • সবাই সিলেকশন গ্রেড পাবেন—তা নয়, এটি নির্ভর করে ACR ও কর্মক্ষমতার উপর।
  • শুধুমাত্র একবার টাইম স্কেল পাওয়া যায়—এটিও সঠিক নয়; নিয়ম অনুযায়ী একাধিকবার পাওয়া যায়।
  • তথ্য যাচাইয়ের উপায়
  • সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য উপায় হলো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট পরিদর্শন করা। এছাড়া সংশ্লিষ্ট অফিসের নোটিশ বোর্ড নিয়মিত চেক করাও জরুরি।

মিডিয়া ও পত্রিকায় আলোচনার ঝলক 

  • ডিজিটাল আবেদন ও স্বয়ংক্রিয় যাচাই
  • ইতোমধ্যে কিছু দপ্তরে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে সব অফিসেই এই পদ্ধতি চালু হলে কর্মচারীরা আর হয়রানির শিকার হবেন না।
  • নীতিমালার পরিবর্তনের সম্ভাবনা
  • বর্তমানে টাইম স্কেল ৮, ১২ ও ১৫ বছরে প্রদান করা হয়। তবে নতুন প্রস্তাবে এটি আরও যুক্তিসঙ্গত করে ৭, ১০ ও ১৩ বছরে আনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপসংহার ও পরামর্শ

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড শুধু একটি আর্থিক সুবিধা নয়—এটি একজন সরকারি কর্মচারীর সম্মান, তার পরিশ্রমের স্বীকৃতি এবং পেশাগত অগ্রগতির প্রতীক। অনেক সময় এই সুবিধাগুলো সময়মতো না পাওয়া গেলে হতাশা তৈরি হয়। তাই প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর উচিত নিয়মিত তথ্য হালনাগাদ রাখা, নিজের কর্মফল ভালো রাখা এবং প্রয়োজন হলে আইনগত সহায়তা নেওয়া।

সবার জন্য এই সুবিধা সমভাবে কার্যকর হলে একটি সুশৃঙ্খল ও উৎসাহী কর্মপরিবেশ তৈরি হবে, যা পুরো প্রশাসন ব্যবস্থাকে গতিশীল করবে।

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড বাংলাদেশ

FAQs: সাধারণ জিজ্ঞাসা ও উত্তর

১. টাইম স্কেল কয় বছর পর পাওয়া যায়?
৮, ১২ ও ১৫ বছর পূর্ণ হলে টাইম স্কেল প্রযোজ্য হয়, নির্দিষ্ট শর্ত পূরণসাপেক্ষে।

২. সিলেকশন গ্রেডের জন্য আলাদা পরীক্ষা লাগে কি?
না, তবে ACR, কর্মদক্ষতা ও সিনিয়রদের সুপারিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৩. টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড একাধিকবার পাওয়া যায় কি?
হ্যাঁ, একাধিক ধাপে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পাওয়া যায়।

৪. এ সুবিধাগুলো না পেলে কোথায় অভিযোগ করবো?
প্রথমে নিজ অফিস, এরপর বিভাগীয় দপ্তর ও প্রয়োজনে আদালতে রিট করা যায়।

৫. টাইম স্কেল পেলে কি ইনক্রিমেন্ট বাড়ে?
হ্যাঁ, টাইম স্কেল পাওয়ার ফলে মূল বেতন বাড়ে, ইনক্রিমেন্টও বাড়ে।

আরও পড়ুন:

Leave a Comment